তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী

শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হচ্ছে —
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ বা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয়
সংযোজন করতে হবে।
৫. অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।
আমরণ অনশনে বসা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী বেল্লাল হাসান বলেন, যেদিন আমাদের সাবেক শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান ভাইয়ের সঙ্গে আমার দেখা হয় সেদিন নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এদেশে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষার দ্বারা তৈরি করে, শিক্ষা সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলবো। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, এ দেশে শিক্ষার জন্য আর কোনো সিদ্দিক চোখ হারাবে না। শিক্ষা হবে সবার জন্য উন্মুক্ত। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার হলেও তা থেকে এ দেশের মানুষ বঞ্চিত।
তিনি বলেন, প্রচলিত সিন্ডিকেট ভাঙ্গা তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেই সম্ভব। এই সরকার জনগণের কাছে কথা দিয়েছিল সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাদের কাছে গেলে তারা আমাদের কথা শুনবে। আমরা গিয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি। দেশের সব সিন্ডিকেট ভেঙ্গে শিক্ষাকে সবার জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। সেজন্যই আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এই প্রচলিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আমি ই সর্বশেষ শহীদ হতে চাই। আমি আশা করি আমার জীবনের মধ্য দিয়ে হলেও দেশের শিক্ষা সংস্কার হোক তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।
অনশনে বসা আমিনুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই তিতুমীর আমার প্রাণের ক্যাম্পাস। তাই এ ক্যাম্পাসকে ভালোবেসে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। দীর্ঘদিনের এই আন্দোলনের পরিক্রমায় রাষ্ট্র ও শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আমাদের নিয়ে বিভিন্ন নাটকীয়তা লিপ্ত হয়েছেন। কিন্তু গতকাল শিক্ষা উপদেষ্টা নিজে যখন ঘোষণা দেন যে, সাত কলেজকে নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হবে। তখন আমি মনে করি যেহেতু আন্দোলনটি আমরাই শুরু করেছিলাম তাই যতক্ষণ আমার দেহে প্রাণ আছে ততক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন করে যাবো।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরমধ্যে একটি কলেজ হচ্ছে সরকারি তিতুমীর কলেজ। অধিভুক্তির পর থেকে এখন পর্যন্ত এ কলেজের অ্যাকাডেমিক সব কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। এরআগে সরকারি তিতুমীর কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল।