সরকারকে ঋণ দেন সাবেক গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক :নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছেন সরকারকে। ওয়েস অ্যান্ড মিনস অ্যাডভান্স (ডব্লিউএমএ) থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা এবং ওভার ড্রাফট (ওডি) থেকে নেওয়া হয় ১২ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে উইন্ডো দুটির প্রতিটি থেকে জরুরি প্রয়োজনে আট হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সীমা ছিল। জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনের সময়ে প্রতিটি উইন্ডো থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা করে মোট ২৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ ঋণসীমার অতিরিক্ত চার হাজার কোটি টাকা করে বেশি ঋণ দেওয়া হয়। যার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি এ পদক্ষেপের ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টদের অভিমত-সাবেক গভর্নর রউফ তালুকদার একচ্ছত্র নিয়মকানুনের পাত্তা দিতেন না। সরকারকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয়টি তিনি আমলে নেননি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন অর্থ উপদেষ্টা ও নতুন গভর্নর এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে অনুমোদন দিয়েছেন।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সরকারকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ধার দেওয়ার মানে টাকা ছাপানো। সরকারকে এত বেশি ঋণ দেওয়ার অর্থ মূল্যস্ফীতিতে ইন্ধন জুগিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওডি এবং ডব্লিউএমএ থেকে নির্ধারিত সীমা না মেনে ঋণ দেওয়ার অর্থ এটি অনিয়ম হয়েছে। বিগত সময়ে যা ঘটেছে সেটি কিভাবে হলো খতিয়ে দেখে আগামীতে যাতে এ ধরনের অনিয়ম না হয় তা নিশ্চিত করা দরকার। এক্ষেত্রে রক্ষাকবচ অতীতে কাজ করেনি, সেটি চিন্তা করে আগামীতে কি ধরনের রক্ষাকবচ দেওয়া যায় সেটিও ভাবতে হবে।

সরকারি চাকরিতে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঘটনাত্তোর অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর সাপ্তাহিক ২ দিন ছুটির পর ৪ আগস্ট অফিস খোলা ছিল। ওই দিন কারফিউ ভেঙে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের একদফা অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। এর পরদিন ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। যে কারণে এই ঋণের ঘটনাত্তোর অনুমোদন দেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। গভর্নর পদত্যাগ করে পালানোর কারণে এ নিয়ে এ ঋনের অনুমোদন নেওয়া হয়নি, কিন্তু সরকার টাকা ধার করে চলেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button